টেক্সটাইল ও ডায়িং শিল্পের দূষকসমূহ
টেক্সটাইল ও ডায়িং শিল্পে নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহৃত হয়, যা পরিবেশে দূষণ সৃষ্টি করে। এই শিল্পের বিভিন্ন ধাপ, যেমন সুতা তৈরি, বুনন, রঞ্জন, এবং পণ্যের ফিনিশিংয়ের সময় বিভিন্ন প্রকার দূষণ ঘটতে পারে। এই দূষকগুলি ভূমিতে, বায়ুতে এবং পানিতে মিশে পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে।
পানি দূষণ
টেক্সটাইল ও ডায়িং শিল্পে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো পানি দূষণ। ডায়িং প্রক্রিয়ার সময় ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ, রঞ্জক এবং ধোয়া পানি পরিবেশে প্রবাহিত হয় এবং জলাশয়ে গিয়ে পানি দূষণ সৃষ্টি করে। এই দূষণ পানি জীবজন্তু এবং মানুষদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে।
ডায়িং প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত কিছু প্রধান দূষক হল:
- রঞ্জক (Dyes): বিভিন্ন রঙের জন্য ব্যবহৃত রঞ্জকগুলি পানি এবং মাটিতে জমা হয়ে দীর্ঘস্থায়ী দূষণ সৃষ্টি করে।
- মিনারেল ওয়াশ: কাপড় পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য যেমন সোডিয়াম, সালফেট, ক্লোরাইড ইত্যাদি পানি দূষণ করে।
বায়ু দূষণ
টেক্সটাইল শিল্পে ব্যবহৃত কিছু রাসায়নিক পদার্থ যেমন সলভেন্টস (solvents) এবং অন্যান্য রিঅ্যাকটিভ কম্পাউন্ড বায়ু দূষণ সৃষ্টি করতে পারে। এরা বায়ুর মাধ্যমে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে, যা মানুষের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
টেক্সটাইল ও ডায়িং শিল্পের বায়ু দূষণের কারণসমূহ:
- ভিনাইল ক্লোরাইড (Vinyl Chloride): এই রাসায়নিক পদার্থ শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- ফর্মালডিহাইড (Formaldehyde): ফর্মালডিহাইড টেক্সটাইল পণ্য তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়, এবং এটি বায়ুতে মিশে মানুষের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
মাটি দূষণ
টেক্সটাইল ও ডায়িং শিল্পে ব্যবহৃত কিছু রাসায়নিক উপাদান মাটির গুণমান নষ্ট করতে পারে। এই পদার্থগুলো মাটির অণুপ্রবাহ, জলধারণ ক্ষমতা এবং মাটি উৎপাদন ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে।
মাটি দূষণের প্রধান কারণ:
- রাসায়নিক বর্জ্য: তেল, কেমিক্যালস, পেন্ট, ডিটারজেন্ট ইত্যাদি বর্জ্য মাটির মধ্যে প্রবাহিত হয়ে এর গুণগত মান কমিয়ে দেয়।
- অসচেতন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: টেক্সটাইল শিল্পে বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে অনিয়মিত ব্যবস্থাপনা মাটির দূষণের অন্যতম কারণ।
সারাংশ
টেক্সটাইল ও ডায়িং শিল্পে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থগুলি পরিবেশে বিপুল পরিমাণ দূষণ সৃষ্টি করতে পারে। পানি, বায়ু এবং মাটি দূষণ এই শিল্পের প্রধান সমস্যা। দূষণ নিয়ন্ত্রণে আরও সচেতনতা এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি কমানো সম্ভব।
Read more